Thursday, February 4, 2016

সহজে ইংরেজি শিখার ১২ স্টেপ (প্রথম পর্ব)

!

সহজে ইংরেজি শিখার ১২ স্টেপ (প্রথম পর্ব)

ইংরেজি শিখার ১২ স্টেপ (প্রথম পর্ব) – Jahankar Mahbub
আমরা ইংরেজি পত্রিকা পড়ে, সাব-টাইটেল ওয়ালা মুভি দেখে, কিংবা ইংলিশ মিডিয়ামের কারো সাথে টাঙ্কি মেরে ইংরেজি শিখার চেষ্টা করি। আবার ইংরেজি গান শুনে, পকেটে ডিকশনারি নিয়ে, এমনকি কোচিং সেন্টারেও ভর্তি হই। তবে ফ্রেন্ডদের সামনে ইংরেজিতে কথা বলতে গিয়ে শব্দ খুঁজে না পেয়ে, হাসির পাত্র হয়ে, ইংরেজি শিখার চেষ্টাকে চিরদিনের জন্য আনফ্রেন্ড করে দেই।
স্টেপ-০: কেনো শিখতে গিয়েও ব্যর্থ হই
পত্রিকা পড়ে, ইংরেজি শিখতে গিয়ে, এক লাইনের মধ্যে, চৌদ্দবার ডিকশনারিতে শব্দের অর্থ খুঁজতে হয়। তারপরেও পুরা সেন্টেন্সের মিনিং অর্ধেকও বুঝতে পারি না। এইভাবে ১৫-২০ মিনিট ইংরেজির অত্যাচার সহ্য করে টায়ার্ড হয়ে যাই। দুই দিন পরে ভুলে যাই, কি খবর পড়তেছিলাম, আর কেনোইবা ইংরেজি পত্রিকা পড়তেছিলাম।
ইংরেজি রেডিও বা অডিও শুনতে গেলেও একই সমস্যা হয়। শব্দের অর্থ জানি না। দুই একটা পরিচিত ওয়ার্ড শুনলে, মাথার মধ্যে- “কি জানি মিনিং, কি জানি মিনিং?” করতে থাকে। শব্দের অর্থ মনে করার চেষ্টা করতে করতে, অডিও কিন্তু বসে থাকে না। চিন্তা করার কারণে, অডিও এর দুই এক লাইন মিস হয়ে যায়। তারপর না পারি অডিও ঠিক মতো শুনতে। না পারি শব্দের মিনিং বুঝতে। ভিডিও বা সিনেমা দেখতে গেলে আরও বেশি বিপদ। এক সাথে তিনটা সমস্যা- না পারি সাব টাইটেল পড়ে ঠিকমতো মিনিং বুঝতে, না পারি উচ্চারণ শুনে নিজে নিজে উচ্চারণ ঠিক করতে, না পারি মিনিং বুঝতে। শেষপর্যন্ত মুভিটাও ভালোমতো দেখা হয় না, ইংরেজি শিখার অগ্রাহও ধরে রাখতে পারি না।
এইভাবে সপ্তাহ-খানেক চেষ্টা করার পরে মনে হয়- আমরা টায়ার্ড হয়ে যাই। টায়ার্ড হয়ে গেলে, মনে মনে ভাবি- একদিন রেস্ট নিয়ে আবার শুরু করবো। তবে আমাদের একদিন রেস্ট নিতে গেলে, দুই মাস শেষ হয়ে যায়, মাগার রেস্ট নিয়ে আবার শুরু করা হয় না।
তাই বিগিনার লেভেলে ইংরেজি শিখার জন্য দৈনিক ১৫ থেকে ৩০ মিনিট সময় দিলেই হবে। সেটা একটানা না হইলেও চলবে। ধরেন, ক্লাসে যাওয়ার পথে, বাসে বা ঘুম থেকে উঠে, ৫ মিনিট করে ভেঙ্গে ভেঙ্গে সময় দিলেও হবে।
স্টেপ-১: 3W
শুনেন, ইংরেজি একটা সমুদ্র। দুই তিন মাসে এই সমুদ্র গিলে খাওয়া সম্ভব না। সো, পুরা সমুদ্র টার্গেট না করে, ছোট একটা অংশকে টার্গেট করতে হবে। সেই টার্গেট সেট করতে হবে তিনটা প্রশ্ন দিয়ে Why, What, When (3W)
Why: প্রথমেই বুঝতে হবে, আপনি কোনো ইংরেজি শিখতে চান?
=> হতে পারে- হায়ার স্টাডি করতে চান বা চাকরির ইন্টারভিউতে ভালো করতে চান , কিংবা বিদেশী ক্লায়েন্ট হ্যান্ডেল করতে ইংরেজি শিখতে চান।
What: আপনি, ইংরেজির কি শিখতে চান?
=> হয়তো বলবেন- সব, বা স্পিকিং, বা লিসেনিং, বা দুইটাই। এগুলার কোনটাই গ্রহণযোগ্য উত্তর না। আরো স্পেসিফিক হতে হবে। আবারও জিজ্ঞেস করবেন, স্পিকিং এর কি? হয়তো বলবেন কিভাবে অফিসিয়াল কথাবার্তা। এটাও স্পেসিফিক না। অফিসে হাজারো রকমের কথাবার্তা বলতে হয়। আরো বেশি স্পেসিফিক হওয়া লাগবে। এমন স্পেসিফিক হওয়া লাগবে যেটা একদিন, দুইদিন, সর্বোচ্চ তিনদিনের মধ্যে শিখে ফেলা যায়। তার চাইতে বড় কোন টার্গেট নিলে, কোনদিনও করে উঠতে পারবেন না। তাই খুবই ছোট একটা টার্গেট নিতে হবে হবে। যেমন, “কিভাবে কাস্টমারকে ওয়েলকাম জানাতে হয়”। এইটা স্পেসিফিক হইছে। কারণ দুই-তিনদিনের মধ্যে এইটা শিখে ফেলা যাবে।
When: তারপর জিজ্ঞেস করতে হবে -কখন শিখতে চান?
=>সবসময় এই প্রশ্নের উত্তর হতে হবে- আজকেই, এক্ষুনি। এই মুহূর্তে। কখনোই কালকে বা পরের সপ্তাহে বলা যাবে না। তাইলে শুরু করাই হবে না। আপনি যেই গাধা মার্কা আছেন, সেই গাধা মার্কাই থেকে যাবেন।
স্টেপ-২: জাস্ট লিসেন
অনলাইনে বা ইউটিউবে সার্চ দিয়ে একটা অডিও বের করতে হবে। তিন মিনিটের অডিও। সর্বোচ্চ পাঁচ মিনিটের হতে পারে। ভিডিও হলে, ভিডিও না দেখে, শুধু হেড-ফোন কানে দিয়ে শুনতে হবে। অটো রিপ্লে দিয়ে, কমপক্ষে ১০-১৫ বার শুনবেন। শুধু শুনবেন। চোখ বন্ধ করে রিলাক্স হয়ে একই জিনিস বারবার শুনবেন।
যদি খেলা দেখার সখ থাকে, ভিডিও বন্ধ করে শুধু কথা শুনবেন। তবে পুরা খেলার ধারাভাষ্য শুনা যাবে না। শুধু চার পাঁচ মিনিটের অংশ নিয়ে, একই জিনিস বারবার শুনতে হবে। কোন অভিনেতা বা মডেলের ক্রাশ খাইলে, তার সাক্ষাৎকার এর অডিও মোবাইলে নিয়ে হেড-ফোন দিয়ে বারবার শুনবেন। ইংরেজি খবর দেখলে ভিডিও বন্ধ করে শুধু অডিও শুনবেন।
মনে রাখবেন, আপনার উদ্দেশ্য লিসেনিং। ইংরেজি শুনা। বুঝা কিন্তু না। বুঝা পরে আসবে। আগে শুনতে হবে। জাস্ট শুনবেন। শুনতে গিয়ে একই সাথে ওয়ার্ড শিখা, উচ্চারণ শিখা, গ্রামার শিখা, সব করা যাবে না। বি ফোকাসড, ফোকাসড এন্ড ফোকাসড।
স্টেপ-৩: ডোন্ট ফোকাস অন ওয়ার্ড, জাস্ট লিসেন
বাচ্চারা কিভাবে কথা শিখে? তারা কিন্তু মিনিং জানে না। আব্বু কি জিনিস, আম্মু কি জিনিস বুঝে না। ডিকশনারি খুলেও মিনিং বের করার চেষ্টা করে না। বরং একই জিনিস বারবার শুনতে থাকে। এক দুই মাস শুনতে শুনতে নিজে নিজেই একটা ধারণা তৈরি হয়ে যায়- এই লোকটা যখন আসে, তখন লোকটাই আব্বু আব্বু বলে। আবার ঐ মহিলাটা যখন আসে, তখন সে আম্মু, আম্মু বলে। এই শুনতে শুনতেই বাচ্চারা শিখে ফেলে। সো, আপনিও খালি শুনার চেষ্টা করবেন। শিখার চেষ্টা পরে দেখা যাবে।
বাংলায় কেউ কিছু বললে, কয়েকটা শব্দ শুনলেই আপনি ধরে ফেলতে পারেন, সে কি নিয়ে কথা বলতেছে। প্রত্যেকটা শব্দ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে ডিকশনারিতে মিনিং খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন না। একইভাবে ইংরেজি শুনার সময়, ওয়ার্ড বাই ওয়ার্ড মিনিং খুঁজে বের করার চেষ্টা করবেন না। কাগজ কলম নিয়ে ওয়ার্ড লিখতে যাবেন না। কোন শব্দ ইম্পরট্যান্ট হলে, সেটা বিভিন্ন ভিডিওতে বার বার ফিরে আসবে। বারবার ফিরে আসতে আসতে আপনিও বাচ্চাদের আব্বু আম্মু শিখার মতো করে, নিজের অজান্তেই শিখে ফেলবেন।
.
এই লিসেনিং চলবে এক মাস। ছয় সাতটা পাঁচ মিনিটের ভিডিও ১০-১৫ বার করে শুনবেন। আর একটাই কথা মনে রাখবেন- when you are listening …just listen …relax and don’t worry…don’t stop…you don’t have to understand every word …
স্টেপ -৪: তোতা পাখি
গত এক মাস যে অডিওগুলা শুনছিলেন, সেগুলা বার বার শুনতে শুনতে অনকেটা মুখস্থ হয়ে যাওয়ার কথা। যদিও পুরাপুরি মিনিং নাও জানতে পারেন। এখন সেই অডিওগুলা হেড-ফোন কানে দিয়ে, দরজা বন্ধ করে, অটো রিপ্লে দিয়ে, অডিও চলার সাথে সাথে, শুধু প্রথম সেন্টেন্সটা বলার চেষ্টা করবেন। বলতে না পারলে, অডিও থামানোর দরকার নাই। রিপ্লে হয়ে আবার যখন আসবে, তখন বলার চেষ্টা করবেন। প্রথম সেন্টেন্সটা এইভাবে তিনবার বলার চেষ্টা করবেন। প্রথম সেন্টেন্স প্রাকটিস হয়ে গেলে, পরের সেন্টেন্স বলার চেষ্টা করবেন। এইভাবে প্রথম পাঁচটা সেন্টেন্স প্রাকটিস হয়ে গেলে, আজকের জন্য খতম। কালকে আবার অডিও এর মাঝখানের পাঁচটা সেন্টেন্স ট্রাই করবেন। তারপরের দিন লাস্টের পাঁচটা সেন্টেন্স ট্রাই করবেন।
বাচ্চাদের শিখানোর সময়, তাদের কানের কাছে একই শব্দ বার বার বার বলতেই থাকে। বলতেই থাকে। শুনতে শুনতে বাচ্চাদের কান ঝালাফালা করে ফেললে, বাচ্চারা দুই-একটা শব্দ বলা শুরু করে। তারপর ভুল ভাল দুই-একটা সেন্টেন্স। আপনিও একইভাবে শুরু করবেন।
স্টেপ-৫: জাস্ট স্পিক
সপ্তাহের প্রথম তিনদিন যে অডিওটা, কানে হেড-ফোন লাগিয়ে, অডিও এর সাথে সাথে বলার চেষ্টা করছিলেন, সেটাই পরের তিনদিন একটা দুইটা সেন্টেন্স বলবেন। তবে এইবার কানের সাথে হেডফোন না লাগিয়ে বলবেন। নিজে নিজে বলার চেষ্টা করবেন। যখন বলবেন, তখন শুধু বলবেন। অডিও থেকে কি রকম শুনছিলেন, সেটার মতো উচ্চারণ হইছে কিনা, সেটার মতো গ্রামার হইসে কিনা, তার মতো স্পিড আসতেছে কিনা, চিন্তা করা যাবে না। ভুল, কি ঠিক হইছে, চিন্তা করতে যাবেন না। শুধু মুখ দিয়ে শব্দ বের করতে থাকবেন।
শুনেন, আপনি বাংলা বলার সময় গ্রামার ঠিক করে কথা বলেন না। উচ্চারণ সব ঠিক হয় না। আর কোন পিচ্চি বাচ্চা যদি বাংলা কোন শব্দ ধীরে ধীরে কিংবা ভুল উচ্চারণ করে, সেন্টেন্স ঠিক মতো বলতে না পারে, আমরা কিন্তু তার কথা বুঝে ফেলি। সে কি বলতে চাইছে, সেটা কিন্তু ধরে ফেলতে পারি। একইভাবে আপনি ইংরেজি প্রথম প্রথম শিখতেছেন। আপনি বাংলায় পাকনা হইলে, ইংরেজিতে কাঁচা। ইংরেজিতে একটা কাঁচা বাচ্চা। তাই আপনার উচ্চারণ ঠিক না হলে, গ্রামারে ভুল হইলে, থেমে থেমে বলে দিতে পারলেই, যে শুনতেছে সে বুঝে ফেলবে।
আর ইংরেজি প্রাকটিস করার জন্য, আরেকজন লাগবে এমন কোন কথা নেই। ইংরেজিতে ভালো এমন কাউকেও লাগবে না। আপনি নিজে নিজেই পারবেন।
Speak English fluently without thinking about the rules and logic.
স্টেপ-৬: একসাথে
এই যে লিসেনিং এবং স্পিকিং এর স্টেপ চালাচ্ছিলেন, এই দুইটা স্টেপ কয়েকবার রিপিট করতে হবে। এবং ইংরেজি শিখাটাকে একটা অভ্যাসে পরিণত করতে হবে। যত কিছুই হোক না কেনো, আপনার ভাত খাওয়া কিন্তু বাদ যায় না। সো, একইভাবে ইংরেজি শিখা বাদ দেয়া যাবে না। প্রয়োজন হলে, নিজেই নিজেকে শর্ত দিবেন। আগে ১৫ মিনিট ইংরেজি প্রাকটিস করে নেই, তারপর ভাত খাবো।
রিডিং, রাইটিং, ভুকাবুলারী, গ্রামার, প্রাকটিস করার উপায়সহ আরো কয়েকটা বিষয় নিয়ে পরের পর্বে কথা হবে।


TO BE CONTIBUE

No comments:

Post a Comment